আমাদের বাড়ি কলকাতার কাছে এক মফস্বলে। ছিল গোলাভরা ধান, ছিল পুকুরে মাছ, ছিল একান্নবর্তী পরিবার আর ছিল আমাদের বাড়ির অধিষ্ঠাত্রী ঠাকুর শ্রী শ্রী নন্দ নন্দন মানে শ্রীকৃষ্ণের একটি রূপ। শ্রীকৃষ্ণের অষ্টোত্তর শতনামের কথা আমরা সকলেই জানি তারই মধ্যে একটি নাম আমাদের অধিষ্ঠাত্রী দেবতার। সদর দরজা দিয়ে ঢুকতেই বাঁদিকে আমাদের মস্ত ঠাকুরঘর আর সেই ঠাকুরঘর কে কেন্দ্র করেই আমাদের জীবন আবর্তিত হতো। বাবার ঘুম যখন ভাঙতো তখনো ভোরের আলো ঠিক মতো ফোটেনি, শিবের স্তোত্র পাঠ শুরু করতেন: “নমানী শমিশানি নির্বাণ রূপম নিজ নির্গুনং নির্বিকল্পং নিরীহঙ বিভূম ব্যাপকং ব্রহ্ম বেদ স্বরুপম চিদাকাশ ও মাকাশ বাসং ভজেহম” আমরা তখন বিরক্ত হয়ে বিছানায় শুয়ে এপাশ-ওপাশ করছি ভোরের আলো ফুটতে বেশ কিছুটা বাকি আছে কিন্তু বাবার ভ্রুক্ষেপ নেই উনি পাঠ করেই চলেছেন: “চলচ্চিত্র গাত্রম চিদানন্দ মিত্রম গলে রুদ্র মালং শ্মশানে বসন্তম নমামী শম্ভূ, শিব শম্ভূ, শিব শম্ভূ” গুরুগম্ভীর গলায় শিব স্তোত্র পাঠ করেই বাবা বিছানা থেকে উঠে পড়তেন আর ঠিক সেই সময়ই পুরোহিত মশাই ঠাকুর ঘর...
Posts
Showing posts from August, 2024
- Get link
- X
- Other Apps
পশ্চিমবঙ্গবাসীরা কলকাতার ডাক্তার এর খুন ও ধর্ষণ এর প্রতিবাদে এখন মধ্যযুগীয় অত্যাচারের শিকার। একদিকে স্বৈরাচারী শাসনতন্ত্রের পুলিশের মোকাবিলা করতে হচ্ছে আর অন্যদিকে শাসক দলের গুন্ডাদের। কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গের আনাচে কানাচে বস্তি, সে খাল পার হোক আর রেল লাইন হোক, লক্ষ লক্ষ যুবক যুবতীর কোনো কাজ নেই। তারা দিনে ক্লাব দখল করে নানাবিধ গুন্ডামি করে যেমন সেই কামারহাটির কেসটা যেখানে ক্লাবঘর সাজা ঘরে পরিণত হয়েছিল। আর রাতে রাস্তা দখল করে যা ইচ্ছে তাই করে এই প্রসঙ্গে বলি গত বছর শীতকালে কলকাতায় ছুটি কাটাতে গিয়ে সচক্ষে দেখা রাতের কলকাতার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। আমাদের বাড়িটা মেন রোড এর পাশে হবার দরুন একটু বেশি সরগরম থাকে সবসময়ই। আমার শোবার ঘর আবার রাস্তার পাশেই। রাতে ঘুমোতে যাবার সময় তখন ঘড়িতে প্রায় সাড়ে দশটা, বাইরে উচ্চৈস্বরে কথা বলার আওয়াজ শুনে দরজা খুলে দেখি একদল ছেলে বছর কুড়ি কিংবা বাইশ হবে রাস্তার মাঝখানে গোল হয়ে বসে বোতল খুলছে। চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে স্নাক্স এর প্যাকেট, গ্লাস ইত্যাদি। বাইকের ক্রমাগত যাওয়া আসা আর মদ্যপানরত ছেলেদের উল্লাসে ঘুমোনোর বারোটা বেজে গেছে ততক্ষন। ভলি...
- Get link
- X
- Other Apps
কলকাতার কাদম্বিনী: মায়ের চোখে সোনার মেয়ে বিষন্নতায় আকাশ ছেয়ে কোন আঁধারে মুখ ঢাকলি কাদম্বিনী, কোথায় গেলি। বাইরে তখন রাত তিনটে নামে সেমিনার রুমে, অকাতর ঘুমে প্রাগতৈহাসিক অন্ধকারে পশুদের আনাগোনা ঘরে একা নির্ভয়া বঙ্গ ললনা। সজাগ এক সিভিক ভলান্টিয়ার করবে কখন তার শিকার শুধুই কি তার কে জানে তার সাথে আরও কার। অবাধ তার আনাগোনা ভোট টানা, হাসপাতালে রোগী আনা আসল না সে মুখোশধারী ফ্রাঙ্কেনস্টাইন দের ওটাই বাড়ি। আর জি কর বর্ষার রক্তে অশ্রুতে লাল, নিউজ চ্যানেল এ চিরাচরিত বাক্যবানের জাল হাথরাস আর উন্নাও বুলি উপচায় আমার দেশে তখন শুধুই শ্রাবন ঘনায়।