আমার দুষনমুক্ত দিল্লির স্বপ্ন:
দিল্লিতে এখন আপাতকালীন স্থিতি। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নিজেদের মতামত বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে জানাতে ব্যস্ত। যে যত চমকপ্রদ খবর দিতে পারবে তার ভক্তসংখ্যার ততো বাড়বাড়ন্ত।বিপরীত্ধর্মী খবর হলে তো আরো ভাল। যেমন ধরুন একজন বললেন সকাল বেলায় ফ্রেশ এয়ার পাওয়া যায় সুতরাং জানালা দরজা তখন খোলা রাখুন।অন্যজন বলে উঠলেন মোটেই নয় বিকেল তিনটে থেকে পাঁচটা প্রদুষন কম তখন খোলা হাওয়া গাইতে গাইতে দখ্খিন দিকের জানলা খুলে দিন।
বিধিনিষেধের অন্ত নেই, এপোলোর এক নামি দামি ডাকতার উপদেশ দিলেন ঘরের মধ্যেই থাকুন, কোনো ব্যায়াম নয়, হাঁটা চলা বন্ধ এমনকি শ্বাস নেবেন ধীরে। জোরে নিঃশ্বাস নিয়েছেন কি ভুগেছেন। ধুলো, ছাই আপনার শরীরে প্রবেশ করে শ্বাসযন্ত্রকে অকেজো করে দিতে পারে।তার চেয়ে চোখ বন্ধ করে যোগোনিদ্রায় শুয়ে থাকুন, শুনতে চেষ্টা করুন ঝিঁঝিঁপোকার ডাক। মনে করুন আপনি এক অশরীরী আত্মা, ওই মহাসিন্ধুর ওপারে ভাসতে ভাসতে চলেছেন পরমাত্মার সাথে মিলনের জন্যে। আহা কি আনন্দ, কি শান্তি।সমুখে শান্তি পারাবার, ভাসাও তরণি হে কর্নধার।
আর একজন তো মহিলা মহলে প্রতিবাদের ঝড় তুলে ফেললেন এই বলে যে ভগবানের অারাধনার সময় ধুপ জ্বালানো নৈব নৈব চ।মনে মনে প্রার্থনা করুন মাগো তোমার অপার করুনা এবারের মত বিপদ কাটিয়ে দাও মা। অথবা গাইতে পারেন "ওরে ঝড় নেমে আয়"। দেখবেন মৃদুমন্দ হাওয়া কখন যে উন্মত্ত সমীরন হয়ে প্রদুষনকে ভাসিয়ে নিয়ে চলে গেছে বহুদুরে।
আমরা সাদামাটা মানুষ, স্ব্প্ন দেখা আমাদের জন্মগত। সেই যে জীবনানন্দের সোনালি চিল, বনলতা সেন থেকে শুরু হল, রবিঠাকুরের কলমের ছোঁয়ায় তা পুর্নতা পেলো তার গানে "স্বপ্নে আমার মনে হল, কখন ঘা দিলে আমার দ্বারে"। স্বপ্ন দেখি দুষনহীন মানুষ মানুষের সম্পর্কের, স্বপ্ন দেখি এক নীলকন্ঠ পাখি যে অমলিন নীল আকাশে স্ব্চ্ছন্দে ঘুরে বেড়ায়। আর স্বপ্ন দেখি দিল্লির পার্কে অনুভব করছি দুষনমুক্ত অফুরন্ত বাতাস।
Comments
Post a Comment